
অমিতাব বর্মন, পীরগঞ্জ প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগঞ্জে মা মেয়ের খন্ডিত লাশ উদ্ধারের পর ঘাতক স্বামী আতিকুল ইসলাম কে গ্রেফতার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড় বদনার পাড়া গ্রামে। ঘাতক আতিকুল ইসলাম উক্ত গ্রামের মনসুর আলীর পুত্র বলে জানা যায়। এ পুলিশ বাদী হয়ে ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা করেছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে বড় বদনাপাড়ায় মরিচের খেতে এক অজ্ঞাত নারীর মস্তক বিহীন লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে পুলিশে খবর দিলে, সিআইডি ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার নাম দেলোয়ারা (৩১) বলে জানা সম্ভব হয়। তিনি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী এবং নীলফামারী জেলার জলঢাকার পশ্চিম গোরমুক্তা গ্রামের রবিউল ইসলামের কন্যা বলে জানতে পারেন পুলিশ। পরে পুলিশ মস্তকহীন লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং সূত্র মোতাবেক ওই নারীর পরের স্বামী আতিকুল ইসলাম কে গ্রেফতার করলে, ঘাতক স্বামী আতিকুল ইসলাম স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করেন। ঘাতক আতিকুলের শিকার উক্তি মোতাবেক শনিবার সকালে চতরা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীরে পাকার মাথা টোংরারদহ এলাকা থেকে ওই নারীর খন্ডিত মাথাটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মহিলার নাম দেলোয়ারা বেগম।
সহকারি পুলিশ সুপার ডি-সার্কেল আছিফা আফরোজা আদুরি জানান – দেলোয়ারা বেগম হত্যার খবরে পূর্বের স্বামী রেজাউল করিম ছুটে আসেন থানা পুলিশের কাছে। এসে জানান – যে তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী দেলোয়ারা বেগমের সঙ্গে তার পাঁচ বছরের কন্যা সন্তান সাইমা আক্তার ও ছিল। রেজাউল করিমের কথামতো দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার আটককৃত ঘাতক আতিকুল ইসলামকে চাপ দিলে, ঘাতক আতিকুল ইসলাম জানান- দেড়মাস আগে শিশু সন্তান সাইমাকে হত্যার পর লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পিছনে পশ্চিমদিকে গাছের বাগানে গোবরের স্তুপের পাশে ৩/৪ফিট গর্ত করে পুতে রেখেছে । ঘাতক আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পরে ঘাতকের তথ্যমতে বর্ণিত স্থান থেকে শিশু সাইমারও অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে মর্গে পাঠানো হয়। এই লোমহর্ষ ঘুরতে কান্ডের ঘটনায় পীরগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দু’টি হত্যাকান্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি এমএ ফারুক। ঘাতক আতিকুল এলাকায় জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত বলেও জানান তিনি। এদিকে স্বজনরা দেলোয়ারার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানালে শনিবার রাতে পুলিশের উদ্যোগে রংপুর সদরের মুন্সিপাড়া সরকারি কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।